কত নামে চেনা যায় একটা শহরকে? ধরা যাক তমলুকেরই উদাহরণ। কিছুদিন আগে অব্দিও নাম ছিল তমোলুক, তারও আগে তম্বুলক।
আর আমরা যদি একটু উকি মারি প্রাচীন সময়ে অর্থাৎ ১৪০০ সালের পূর্বে?
মহাভারতে সংস্কৃত নাম ছিল তাম্রলিপ্ত।
ভারতকোষে তাম্রলিপ্তি।
শব্দরত্নাবলীতে নাম ছিল তমোলিপ্ত (অন্ধকারে আচ্ছন্ন)।
ত্রিকান্ডশেষ নামক প্রাচীন অভিধানে এই জায়গার নাম ছিল বেলাকূল, তাম্রলিপ্ত, তাম্রলিপ্তি ও তমালিকা।
দ্বাদশ শতাব্দীরর লেখক হেমচন্দ্র সুরির অভিধান চিন্তামণিতে নাম দামলিপ্ত, তমালিনী, বিষনুগৃহ।
শব্দকল্পদ্রুম নামক সংস্কৃতি অভিধানে তমোলিপ্তি।
প্লিনির বর্ণনায় (খ্রীষ্টাব্দ প্রথম শতক)তমলুকের নাম তালুকেট।
গ্রীক পন্ডিত টলেমীর (খ্রীষ্টাব্দ দ্বিতীয় শতক) বর্ণনায় এই জায়গাটির নাম রয়েছে তামালিটি (Tamalities).
প্রেমময় দাশগুপ্ত সংকলিত বংগানুবাদ অনুসারে বার্মা উপকথায় বর্ণিত এজেত্তা (Adzeitta) বন্দর আসলে তাম্রলিপ্ত বন্দর।
মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের বৈশালী শহরে আনন্দ চন্দ্র শিলালিপিতে এই শহরের নাম উল্লেখ আছে তাম্রপাট্টানা নামে।
চীনা পরিব্রাজক হিউ এন সাং তমলুককে বর্ণণা করেছিলেন তন্মোলিতি বা তমোলিতি (Tan mo liti) নামে।
আসলে তমলুকের বয়স তো কম হল না, সেই প্রাক সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকে শুরু করে বৈদিক সভ্যতা, বৌদ্ধযুগ, হিন্দুসাম্রাজ্য, মুসলিম শাসন, ইংরেজ উপনিবেশ হয়ে আজকের সময়, বহু ইতিহাসের উত্থান পতনের সাক্ষী থেকেছে এই তমলুক।
নামকরণ এর ইতিহাস, বিবর্তন, বিবরণ নাহয় জানা যাবে অন্য কোনো লেখায়। ফলো করতে থাকুন আমাদের ব্লগ ও পেজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন